এবার কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কারের সঙ্গে পাওয়া যায় চিঠিও। সেখানে ইয়াছিন আরাফাত নামের এক ছেলেকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চিঠি লিখেছেন এক নারী।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) ১০টি দানবাক্স ও একটি ট্রাংক থেকে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। সঙ্গে পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়না ও বিভিন্ন চিরকুট। দানবাক্সে পাওয়া চিরকুটটিতে একজন প্রেমিকা তার প্রিয় মানুষকে জীবনসঙ্গী করে পেতে চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে লেখা ছিল,
‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
আসসালামু আলাইকুম।
হে আমার রব,
তুমি আমার প্রিয় মানুষ টাকে আমার জীবন সঙ্গী হিসেবে আমায় করে দাও। আমি তোমার পরে আমার মা-বাবার পরে আমি তাকে অনেক ভালোবাসি। তুমি তো সবকিছুই জানো। আমি আমার প্রতিটি মোনাজাতে শুধু তাকেই চাই। আল্লাহ সে যদি আমার জন্য কল্যাণকর না হয়, তাহলে তুমি তার ভিতর কল্যাণ দান করো আর আমায় করে দিও। আল্লাহ তোমার কাছে আমার একটাই যাওয়া তুমি আমার প্রিয় মানুষটাকে আমার করে দিও।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এবার ৩ মাস ১৪ দিন পর মসজিদের দশটি দানবাক্স ও একটি ট্রাংক খোলা হয়। প্রায় ৪০০ জনের একটি দল ১০ ঘণ্টা গণনা শেষে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া গেছে। এর আগে ২০২২ সালের ১ অক্টোবর এক মা প্রতিবন্ধী মেয়ের সুস্থতা কামনা করে মসজিদের দানবাক্সে প্রার্থনামূলক চিঠি লিখেছিলেন।
এছাড়া বিভিন্ন সময়ে চিঠিতে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদের নানারকম আকুতি জানানো চিঠি পাওয়া যায়। এর আগে ২০২২ সালে ১ অক্টোবর এক অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীর চিঠি পাওয়া গিয়েছিল সেখানে চাকরি না পেয়ে আত্মহত্যার প্রবণতার হাত থেকে বাঁচতে চিঠিতে লিখেছিল ‘আমাকে বাঁচাও আত্মহত্যার হাত থেকে। আমি বাঁচতে চাই, আর নিতে পারছি না বেকারত্বের বোঝা। সবার খোঁচা দেওয়া কথা। একটা চাকরি হলে হয়তো বেঁচে যেতাম।’
এদিকে জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, আপনারা জানেন কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অন্যতম একটি জায়গা। সকল ধর্মের মানুষ এখানে দান করে থাকেন। তাদের দানের অর্থ দিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স করা হবে যেখানে একসঙ্গে ৩০ হাজার মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবেন।